sportsnscreen

12k Followers

জেনে নিন ভারতে অবস্থিত অপূর্ব সুন্দর কয়েকটি লেকের সন্ধান

26 Nov 2021.8:55 PM

জলাশয় বা লেক চিরকালই মানুষের দৃষ্টিনন্দন করে। বিভিন্ন উচ্চতায় বিভিন্ন বৈচিত্র্যের লেক বা গভীর জলাশয়ের শোভা আমাদের চোখে অদ্ভূত শান্তি দেয়। স্নিগ্ধ শান্ত জলের কলকলানির শব্দে বয়ে যায় মন , তা সে প্যাঙ্গং লেকই হোক বা ডাল লেক। পাহাড় বেষ্টিত বা সবুজের মাঝে অবস্থিত একেক লেকের সুন্দরতা একেক রকম।

আর বিভিন্নতা প্রত্যক্ষ করতে আপনাকে বিদেশে যেতে হবে না। ভারতের বুকেই রয়েছে এমন বিচিত্র্য সুন্দর সব লেক। যার রুপে আপনি মোহিত হতে বাধ্য।

১) প্যাঙ্গং সো , লাদাখঃ লাদাখে অবস্থিত এই লেকটি একটি নোনা জলের হ্রদ। লেহ থেকে পাঁচ ঘণ্টার পাহাড়ী রাস্তা ধরে গেলেই পাওয়া যাবে এই প্যাঙ্গং সো লেক। পাহাড় বেষ্টিত এই নীল রঙা লেকের শোভা স্বভাবতই দৃষ্টি আকর্ষণ করার মতো। চিত্রগ্রাহকদের জন্য এই জায়গা একেবারে উপযুক্ত।

২) পরাশর লেক , মাণ্ডীঃ পরাশর লেক , এক বরফ জমাট বাঁধা লেক, সন্ন্যাসী পরাশরকে নিবেদিত হিমাচল- স্টাইল মন্দিরের পাশেই অবস্থিত। মাণ্ডী থেকে এই লেকের দূরত্ব মাত্র 49 কিলোমিটার। সবুজে ঘেরা এই লেকের সৌন্দর্যও সীমাহীন। শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে এই লেকের তীরে সময় কাটাতে খুব ভাল লাগবে। এটাতে খুব সহজেই ট্রেক করতে পারেন, এমনকি বাচ্চাদের সাথেও।

৩) লেক পিচোলা , উদয়পুরঃ প্রায় চার কিমি দীর্ঘ ও তিন কিমি প্রসস্থ এই কৃত্রিম লেকটি উদয়পুরের সিটি প্যালেসের ওপর নির্মিত। সিটি প্যালেস থেকে লেকটিকে দেখা যায়। এই লেকে আপনি রামেশ্বর ঘাট থেকে দীর্ঘক্ষনের জন্য নৌকাবিহারও করতে পারেন। সূর্যাস্তের সময়ও নৌকাবিহারের সুব্যবস্থা রয়েছে , যা এক দারুন রোম্যান্টিক অভিজ্ঞতা আপনাকে উপহার দেবে।

আরও পড়ুন : বালির চড়া ঢেকেছে নদীকে, শুষ্ক ফল্গুর নেপথ্য কারণ জানলে অবাক হতে হয়

আরও পড়ুন : সুবিস্তৃত বরফের চাদরে মোড়া স্বর্গরাজ্য আউলি

৪) চন্দ্রতাল লেক , স্পীতিঃ চন্দ্রতাল মানে 'চন্দ্রের ন্যায়', অর্ধচন্দ্রকার আকৃতির জন্য এই লেকের নামকরণ হয় চন্দ্রতাল লেক। এটি লাহৌল এবং স্পীতির কুঞ্জুম লা পাস থেকে প্রায় 7কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ৪৩০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই লেক প্রায় স্যাফায়ারের নীল রঙের মত, এবং প্রশস্ত সবুজাভ সমতল দিয়ে ঘেরা। এটি স্পীতি ছায়াপথ দেখার এক আদর্শ জায়গা। অপুর্ব সুন্দর দেখতে এই লেক, দেখলে মন ভরে যাবে।

৫) লোকতাক লেক , মনিপুরঃ ফ্লোরা এবং ফণার জন্য আদর্শ আর উত্তর-পূর্বীয় ভারতের মধ্যে সবথেকে বড় লেক। এছাড়াও ভাসমান ফুমডিসের জন্য বিখ্যাত এই লেক। ফুমডিস হল মাটির , গাছপালার আর নানা অর্গানিক ম্যাটারের পুঞ্জীভূত অংশ যা পচনের বিভিন্ন পর্যায়। এই পূঞ্জীভূত অংশগুলি লেকের ওপর দ্বীপপুঞ্জ তৈরি করে যেখানে মানুষেরা থাকে। এই ছোট ছোট ফুমডিসের দৃশ্য লোকতাক লেকের দৃশ্যকে পর্যটকদের কাছে সুন্দরতর করে তোলে।

৬) সোমগো লেক , গ্যাংটকঃ এই লেক স্থানীয় ভাষায় ছাঙ্গু লেক নামেই বেশি পরিচিত। নাথু লা পাস যাওয়ার পথে গ্যাংটক থেকে প্রায় 35 কিলোমিটার দূরে এটি অবস্থিত। তুষারাবৃত সুউচ্চ শৃঙ্গ বেষ্টিত এই লেকের শোভায় অভিভূত হতে হয়। এই হ্রদের জল আশেপাশের বরফগলা জলের দ্বারাই পূর্ণ হয়। লেকের চারধারে রঙবেরঙের প্রার্থণা পতাকা এই জায়গাটিকে পূর্বীয় হিমালয়ের সবথেকে ভাল জায়গার একটি করে তুলেছে।

৭) ডাল লেক , শ্রীনগরঃ কাশ্মীরের আদিম সৌন্দর্যকে এর সম্পূর্ণ গৌরব দিয়ে বুঝতে গেলে , আপনার ভ্রমণে ডাল লেক অবশ্যই থাকা দরকার। গ্রীষ্ম এবং শীতে আলাদা আলাদা মনোরম দৃশ্যের সঙ্গে এক অপার সৌন্দর্যে পূর্ণ হয়ে থাকে এই ডাল লেক। 15 কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এই লেকে রাজার যুগ থেকে বহু হাউসবোটে ভর্তি। হিম শীতল আমেজে পাহাড়ের কোলে অবস্থিত এই লেক নিঃসন্দেহে দৃষ্টিনন্দন।

৮) চেম্ব্রা লেক , ওয়ানাদঃ ওয়ানাদে চেম্ব্রা শৃঙ্গে যাওয়ার পথে অবস্থিত হৃদয় আকারের এই লেককে প্রেমীদের স্বর্গ বলে মনে করা হয়। চেম্ব্রা পাহাড় ট্রেকিং-এর জন্য জনপ্রিয়। চেম্ব্রা লেকের আকৃতি ছাড়াও এর পারিপার্শ্বিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও মনোমুগ্ধকর।

৯) রূপকুণ্ড লেক , উত্তরাখণ্ডঃ এই লেকটি 'রহস্যময় বা মিস্ট্রি লেক' নামেও পরিচিত। বলা হয় ৮৫০ অব্দ থেকে এই লেকে রয়েছে মানুষের হাড়। এই রূপকুন্ড লেকের জল বেশির ভাগ সমইয়েই বরফ জমাট বাঁধা থাকে। এখানে যেতে 5-6 দিন ট্রেকিং করতে হয়। এই লেকের বরফ গলে জল হলে স্পষ্ট হয়ে ওঠে এর নীচে থাকা মানুষের কঙ্কালগুলি। যদিও এর পিছনের বৈজ্ঞানিক এবং অতিপ্রাকৃত কারন দেখানো হয়েছে, কিন্তু রহস্য এখনও থেকে গেছে।

১০) ভেম্বানাদ লেক , কুমারাকমঃ কুমারাকমে অবস্থিত এই ভেম্বানাদ লেক ভারতের সবচেয়ে লম্বা লেক। শুধু তা-ই নয় কেরালার বুকে অবস্থিত বৃহত্‍ লেক হল এটি। এই লেক বিশুদ্ধ আর নোনা জলের মিশ্রণে তৈরি যা নোনা জলের বেড় দিয়ে আলাদা করা। এই লেকের পরিচিতি কম হওয়ায় এখানে ভিড়ও কম। তাই নিরিবিলি পরিবেশ আপনাকে এক শান্তিপূর্ণ অভিজ্ঞতা প্রদান করবে। এই লেকে রয়েছে হাউসবোটে থাকার ব্যবস্থাও। এখানে থেকে হ্রদের ওপার রুপ চাক্ষুস করার অভিজ্ঞতাই আলাদা।

Disclaimer

Disclaimer

This story is auto-aggregated by a computer program and has not been created or edited by Dailyhunt Publisher: sportsnscreen